ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

শহরে রুট পারিমট ছাড়াই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ২শতাধিক মাহিদ্রা গাড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার :: কোন প্রকার রুট পারমিট ছাড়াই কক্সবাজারে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে প্রায় ৫ শতাধিক মাহিদ্রা গাড়ী। এর মধ্যে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন রাস্তায় চলছে প্রায় ২ শতাধিক গাড়ী। আর এই মাহিদ্রা গাড়ি থেকে দৈনিক এবং মাসিক ভিত্তিতে চাঁদা তুলা হচ্ছে প্রায় ৪/৫ লাখ টাকা। সেই টাকার ভাগ যাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ, শ্রমিক নেতা সহ কিছু চিহ্নিত চাঁদাবাজদের কাছে। যার কোন টাকাই পাচ্ছে না সরকার।

অথচ এসব অবৈধ গাড়ীর কারনে শহরে যানজট লেগেই থাকে। তাই দ্রুত এসব অবৈধ গাড়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি জোরদাবী জানিয়েছেন সচেতন মহল।

কক্সবাজার শহরের বাস টার্মিনাল, কোর্ট বিল্ডিং চত্তর, বাজারঘাটা এলাকায় নাম্বার ছাড়া বেশ কয়েকটি মাহিদ্রা গাড়ীর চালকের সাথে কথা বলে জানা গেছে সিএনজির চেয়ে বেশি যাত্রী নিয়ে চলাচলকারী এই মাহিদ্রা গাড়ি চলে শহরের বেশির ভাগ রাস্তায় মূলত টাউন সার্ভিস হিসাবেই বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে এই মাহিদ্রা গাড়ি।

এ সময় মাহিদ্রা গাড়ি চালক আলমগীর, নাছির, মনজুর সহ বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মাহিদ্রা গাড়ির কোন রুট পারমিট নাই অনেকের লাইসেন্সও নাই তবে নিয়মিত এবং মাসিক টাকা দিয়েই তারা এসব গাড়ি চালায়।

চালকদের দাবী কামাল নামের একজন তাদের কাছ থেকে যাদের লাইসেন্স আছে তাদের কাছে ৪০০ এবং যাদের লাইসেন্স নাই তাদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ২২০০ টাকা করে নেয়। তারা ট্রাফিক পুলিশ এবং শ্রমিক সংগঠনকে ম্যানেজ করে আমাদের গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করেছে। তবে এই গাড়ি থেকে টাকা তুলার জন্য কয়েক জন ইজারাও নিয়েছে বলে জানান তারা। পরে কামাল নামের সেই ব্যাক্তির কাছ থেকে জানা গেছে সব মাহিদ্রা গাড়ির লাইসেন্স নাই সেটা সঠিক না কিছু গাড়ির আছে তবে বেশির ভাগ গাড়ির লাইসেন্স নাই তবে বেশির ভাগ গাড়ির রুট পারমিট নাই বলে জানিয়ে তিনি বলেন সবাই ২২০০ টাকা দেয় সেটা সঠিক না অনেকের কাছে কমও নেওয়া হয়।

এদিকে বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে আবদুল খাইর এবং সোহেল সহ কয়েকজন এখানে টাকা বিনিয়োগ করেছে তারাই প্রশাসন সহ সব কিছু ম্যানেজ করে এই গাড়ি চালায়।

এদিকে জেলা ট্রাফিক পুলিশের সার্জন জুয়েল এবং সাইফুল কে ম্যানেজ করে এই মাহিদ্রা গাড়ি চলে বলে ও জানান তারা।

এদিকে শুধু কক্সবাজার শহর নয় চকরিয়া, উখিয়া টেকনাফেও বেশ কিছু মাহিদ্রা গাড়ি বিভিন্ন সড়কে নিয়মিত চলাচল করে বলে জানা গেছে।

চকরিয়াতে ওমর নামের একজন মাহিদ্রা গাড়ি থেকে টাকা তুলে। এ ব্যপারে কক্সবাজার বিআরটিএর সহকারী পরিচালক উথোইন চৌধুরী জানান, আমার জানা মতে প্রায় ৩৪০ টি মাহিদ্রা গাড়ির লাইসেন্স হয়েছে তবে কোন গাড়ির রোড় পারমিট নাই। কারন সেই মাহিদ্রা গাড়ি গুলো একটি নির্দিষ্ট সড়কে বা লাইনে চলতে পারবে। তারা সেই লাইন ঠিক করতে না পারাই আমরা রোড় পারমিট দেয়নি। সে হিসাবে লাইসেন্স নিলেও রান্তায় চলাচল করতে পারবে না। আর বর্তমানে দেখা যাচ্ছে তারা শহর জুড়ে চলাচল করছে এটা আইন সম্মত নয়। তারা একটি লাইন বা রাস্তায় চলাচল করতে পারবে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজারের যুব নেতা কলিম উল্লাহ জানান, আমাদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে রাস্তার যানজট, আমরা প্রশাসন সহ বেশির ভাগ ফোরামে যানজট নিরশনের কথা বললেও এ পর্যন্ত কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বরং মাহিদ্রা গাড়ির মত অসংখ্য অবৈধ গাড়ি সড়কে নিয়মিত চলাচল করার কারনে যানজট আরো বাড়ছে। যতটুকু জানলাম মাহিদ্রা গাড়ি গুলো রান্তায় চলাচলের অনুমতি যায়নি আর পাওয়ার ও কথা নয় কারন সেই গাড়ি গুলো একটি নির্দিস্ট রাস্তায় যেমন খুরুশকুল রাস্তার মাথা থেকে চৌফলদন্ডী বা বিমানবন্দর রাস্তার মাথা থেকে নুনিয়ারছড়ার শেষ মাথা এরকম রাস্তায় চলতে পারবে। কিন্তু তারা এখন শহর জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আর মাহিদ্রা গাড়ি গুলো সব সময় দেখা যায় পৌরসভার সামনে, বাজারঘাটা,বাসটার্মিনাল রাস্তার উপর পার্কিং করে বসে থাকে এতে রাস্তায় চরম যানজট লেগে থাকে। তাই এসব অবৈধ গাড়ির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সব রাস্তায় যেন কোন গাড়ি পার্কিং করতে না পারে সে পদক্ষেপ নিতে হবে।

এ ব্যপারে ট্রাফিক পুলিশের সার্জন জুয়েল জানান, আমরা কক্সবাজার আসছি ২ মাস এখনো কারো সাথে ঠিকমত পরিচয়ও হয়নি। আমাদের নাম ব্যবহার করে কারা অপকর্ম করছে সেটা আপনারা সহ আসেন সামনা সামনি প্রমান হবে। তিনি দাবী করেন মাহিদ্রা গাড়ি গুলোর কিছুর লাইসেন্স আছে তাদের সংগঠনের নেতারা আমাদের কাছে সময় চেয়েছে কয়েক দিনের মধ্যে তারা রুট পারমিট নিয়ে আসবে তাই করোনকালীন সময়ে অনেক গাড়ি চালক জীবন জীবিকা হারিয়ে কষ্ট পেয়েছে তাই মানবিক বিবেচনায় কিছুটা সময় দিয়েছি। তবে আমাদের নাম ব্যবহার করে কেউ অপকর্ম করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: